দক্ষিণ সুরমার প্রবীণ মুরব্বী, বিশিষ্ট শালিসী ব্যক্তিত্ব, বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, লালাবাজার আলিম মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, বিবিদইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, বিবিদইল জামে মসজিদের সাবেক মোতাওয়াল্লী, প্রাক্তন ইউপি সদস্য আব্দুল ওয়াহাব খান (খোকা খান) আর নেই। তিনি ২৩ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থান ইন্তেকাল করেন। ইন্না নিল্লাহি………….রাজিউন। মৃতকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি ১ মেয়ে ও ৫ ছেলে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের জানাজার নামাজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় বিবিদইল শাহী ইদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরহুমের লাশ হযরত আবু দৌলত র: মাজার সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজার নামাজে সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী, আসন্ন উপনির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু জাহিদ, সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মস্তাকুর রহমান মফুর, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় সেক্রেটারী মাওলানা ফারুক আহমদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মাহবুব আহমদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা শাহ ইমাদ উদ্দিন নাসিরী, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুক আহমদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী রইছ আলী, উপ প্রচার সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান মতি, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এডভোকেট বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা ফালাকুজ্জামান চৌধুরী জগলু, অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান শোয়েব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী সাইফুল আলম, সাধারন সম্পাদক শামীম আহমদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাজ্জাক হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুক উদ্দিন, আব্দুল মতিন, সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাব্কে চেয়ারম্যান মঈনুল ইসলাম, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লিলু মিয়া, সমছু মিয়া, সিলাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মাখন মিয়া, লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হক ইকবাল, সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল আফিয়ান চৌধুরী, ল্যান্ডমার্ক সিলেট প্রাঃ লিঃ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল আহাদ, মোগলাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম সায়েস্তা, সিলাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকরাম হোসেন বখত, দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাব সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুসিক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমদ শফি, বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিলু, লালাবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বুলবুল আহমদ, সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মুহিদ হোসেন, সিলেট মহানগর বিএনপি নেতা লোকমান আহমদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক নুরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক আশিক আলী, লালাবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী হাজী গৌছ মিয়া, লালাবাজার হাই স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুক্তাদির, বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম রানা, মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুছ সালামসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহন করেন। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন লালাবাজার আলিম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল লতিফ।
উল্লেখ্য, খোকা খানের মৃত্যুর সংবাদে বিষাদের কালোছায়া নেমে এসেছে পুরো লালাবাজার ইউনিয়ন তথা দক্ষিণ সুরমা এলাকায়। সর্বজন শ্রদ্ধেয় এ প্রবীণ ব্যক্তিকে শেষ বারের মতো দেখতে সকাল থেকে তার বাড়িতে সর্বস্তরের জনসাধারন ভীড় করছেন। বর্ষিয়ানের রাজনীতিবিদের চলে যাওয়ায় লালাবাজারবাসীর যে ক্ষতি হয়েছে তা কোন ভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুরমার প্রবীণ মুরব্বি, সমাজ সংস্কারক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল ওয়াহাব খান যিনি খোকা খান দক্ষিণ সুরমার ৬ নং লালাবাজার ইউনিয়নের বিবিদইল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে সন্তান। প্রাক্তণ ইউ.পি মেম্বার থাকার সুবাদে এখনো সবাই মেম্বার সাব বলেই তাকে ডাকে। এই গ্রামেই বেড়ে ওঠা এক সময়ের তরুণ যুবক আজকের দক্ষিণ সুরমার সবার পরিচিত মুখ। আওয়ামী লীগের অন্তঃপ্রাণ এই মানুষটি জীবনের শুরু থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে নিঃস্বার্থভাবে এলাকায় কাজ করে গেছেন । যার ফলে স্বাধীনতা উত্তর দীর্ঘ ৫২ বছর লালাবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি লালাবাজার ইউনিয়নবাসীর একজন সুযোগ্য অভিভাবক হিসেবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জনগনের কল্যাণে কাজ করেছেন। লালাবাজার ইউনিয়নের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সহিষ্ণু মনোভাব একমাত্র খোকা খানের অবদান। এলাকায় যখনই কোন সমস্যা হয়েছে, তিনি ছুটে গেছেন নিজ দায়িত্ব থেকে । সমস্যার একটা সমাধান না করা পর্যন্ত যেন তিনি শান্তি পেতেন না । এই বয়সেও এলাকার সুখে দুঃখে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি হাসি মুখে । সত্যিকার অর্থে মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগ করা মানুষটি নিজের সুখ, সাচ্ছন্দ, বিসর্জন দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতেই সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হতেন । মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারলেই যেন সার্থকতা বোধ করেন । সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে অবিরাম কাজ করে চলে চলছেন তিনি এই বয়সেও । জীবনে কোনদিন চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করেননি, স্বার্থের কারণে কোথাও পদচারণা করেননি, তাইতো আজও সব মানুষের কাছে তিনি আশার প্রতীক ভরসার জায়গা । তরুণ বয়স থেকেই আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া মানুষটি আজও সুখে দুঃখে আছেন দলের সাথে । এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাথে সম্পৃক্ত থেকে ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন তিনি ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিনি এলাকার জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন । অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়েছে তাকে । মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য, নিজের জীবন ও পরিবার কে বিপন্ন রেখে মহান স্বাধীনতার জন্য একজন সংগঠক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করেছেন নিজ দলের দায়িত্ব মনে করে । যুদ্ধকালীন সময়ে এলাকার জনগণ ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষকে নিজের বাড়িতে স্থান দিয়েছেন পরম মমতায়, তাদের থাকা খাওয়া ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিজেই দেখভাল করতেন । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়েন আওয়ামী লীগের এই অন্তপ্রাণ নেতা ।